৩ দিনব্যাপী পাঠাগার সম্মেলন
মঞ্চে উপবিষ্ট মান্যবর অতিথিবৃন্দ, আগত সুধী ও সজ্জন এবং বিভিন্ন পাঠাগারের সংগঠকবৃন্দ! আমার আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন।
বন্ধুরা! আমরা হতাশার সাথে লক্ষ করছি যে, বর্তমান সময়ে আমাদের সাংস্কৃতিক কর্মসূচি পালন নানা ধরনের সামাজিক ও অশরীরি বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। ফলে নতুন প্রজন্ম নানা ধরণের অপসংস্কৃতিতে আসক্ত হয়ে পড়ছে। সমাজে বাড়ছে অমানবিকতা। মহান মুক্তিযুদ্ধের ভিতর দিয়ে যে একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোর স্বপ্ন দেখেছিলো আমাদের পূর্বপুরুষেরা সঠিক সংস্কৃতি চর্চার অভাবে তা আজ বিপরীতগামী। ফলে ফেলে আসা স্টেশনের সাথেই আবার দেখা হচ্ছে আমাদের। আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও দায়িত্ব পালনে অনেকাংশেই ব্যর্থ।
এরকম একটি পরিস্থিতি থেকে আমাদের মুক্তি দিতে পারে বই পড়া কর্মসূচি। আর এ কাজের জন্য আমাদের পাটাতন হতে পারে একটি পাঠাগার। বিভিন্ন সময়ে বিচ্ছিন্ন ভাবে নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো ব্যক্তিবর্গের উদ্যোগে যে পাঠাগারগুলো গড়ে উঠেছিলো তাদের মধ্যে আন্ত:সম্পর্ক স্থাপন করার মাধ্যমে আমরা একটি সুন্দর সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতে পারি। পাঠাগারগুলোর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গড়ে তুলতে পারি সুস্থ সমাজ ব্যবস্থার।
দীর্ঘ ১৮ বছর গ্রাম পাঠাগার আন্দোলন পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা বুঝতে পেরেছি- একটি পাঠাগারের প্রাণ হলো তার সংগঠক। দক্ষ সংগঠক থাকলে সে পাঠাগার ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। আর যেটা প্রয়োজন- চাহিদা অনুযায়ী মানসম্পন্ন বই।
স্বপ্রণোদিত হয়ে যে পাঠাগারগুলো গড়ে উঠেছে- সেই সব পাঠাগারের সংগঠকরা যদি একত্রিত হয়ে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময় করে, তাহলে নতুন করে প্রাণ পাবে পাঠাগারগুলো। নিজেরাও সমৃদ্ধ হতে পারবে। আর সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবি দাওয়া পেশ করার জোরালো অবস্থান তৈরি করতে পারবে। তাই এই পাঠাগার সম্মেলন করার ইচ্ছা প্রকাশ করা।
কীভাবে এই সম্মেলনটা সফল করা যেতে পারে, কী কী বিষয়ের উপর জোর দিতে হবে, কারা কারা অতিথি হবে, এই বিষয়ে দেশের বরেণ্য বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, সংস্কৃতিকর্মী, রাজনীতিবীদসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে কীভাবে সম্পৃক্ত করা যায় সেই বিষয়ে আমরা আপনার মতামত চাচ্ছি।
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যঃ
- পাঠাগারকে কেন্দ্র করে সারা বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক আন্দোলন জোরদার করা।
- পাঠাগারকে সহায়ক- শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা।
- বিভিন্ন সময়ে বিচ্ছিন্নভাবে গড়ে ওঠা পাঠাগারগুলোর মধ্যে আন্ত:সম্পর্ক গড়ে তোলা।
- পাঠাগারের সংগঠকদের মধ্যে পাঠাগার বিষয়ে মৌলিক ধারণার আদান- প্রদান।
- পাঠাগারগুলোর উন্নয়নে সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবি দাওয়া তুলে ধরা। যেমন-
- প্রত্যেক উপজেলায় একটি মডেল পাঠাগার স্থাপন
- বেসরকারি গ্রন্থাগারগুলোতে গ্রন্থাগারিক নিয়োগ
- বাৎসরিক অনুদানের টাকা বৃদ্ধি করা।
সম্মেলনের স্থান : অর্জুনা, ভূঞাপুর, টাঙ্গাইল।
অর্থ সংগ্রহ : গণমানুষের নিকট হতে চাঁদা, বিভিন্ন কম্পানির স্পন্সর, রেজিস্টেশন ফি, ইত্যাদি নানা উপায়
প্রচার ও প্রচারণা : বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে ইউটিউবে প্রচার, লিফলেট, পোস্টর প্রকাশ ও বিতরণ।
কর্ম-পরিকল্পনা তৈরি : নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার জন্য আজকে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। এখানে আপনারা মন খুলে সম্মেলন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিস্তারিত আলাপ আলোচনার করবেন। এই আলোচনার ভিতর দিয়েই সম্মেলনের চূড়ান্ত তারিখসহ একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হবে । সেই ব্যাপারে আমরা সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
সম্ভাব্য তারিখ : ২২-২৪ ডিসেম্বর ২০২২ ( ৩দিনই সরকারি বন্ধ)।
সম্মেলনটি সফল করতে কয়েকটি উপ-কমিটি কাজ করবে। যেমন :
১. পরিকল্পনা উপ- কমিটি : এই কমিটি পরিকল্পনা প্রণয়নে ভূমিকা রাখবে।
২. প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি : এই কমিটি সমস্ত কার্যক্রম প্রচার ও প্রকাশনার দায়িত্বে থাকবে।
৩. অর্থ উপ-কমিটি : সম্মেলনের জন্য ফান্ড সংগ্রহ, স্পন্সরদের সাথে যোগাযোগ ও অর্থ ব্যবস্থাপনায় ভূমিকা রাখবে।
৪. গবেষণা উপ-কমিটি : পাঠাগার আন্দোলনের সমস্যা, সম্ভাবনা, পাঠাগার আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করা, বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা ইত্যাদি বিষয়ে এক বা একাধিক একাডেমিক গবেষণা পরিচালনা করবে এই উপ-কমিটি।
৫. আপ্যায়ন উপ-কমিটি : অতিথিদের আপ্যায়ন, তাদের থাকার ও খাবারের ব্যবস্থা, শৌচাগারসহ তাদের নানা ধরণের সুবিধে অসুবিধে দেখভাল করবে এই উপ-কমিটি।
৬. নিরাপত্তা উপ-কমিটি : এই কমিটি পুরো সম্মেলনের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে।
৮. মঞ্চ সজ্জা ও সাংস্কৃতিক উপ-কমিটি : এই কমিটি মঞ্চের অলংকরণ, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনায় ও পরিকল্পনায় ভূমিকা রাখবে।
৯. চলচ্চিত্র বিষয়ক উপ-কমিটি : এই কমিটি বিভিন্ন কনটেন্ট তৈরি করবে , তা ফেইসবুক, ইউটিউব ইত্যাদি নানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যামে প্রচার করবে, অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে পুরো অনুষ্ঠান অডিও ও ভিডিও ধারণ করবে। সম্মেলনে আগত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তির, পাঠাগারের সংগঠকদের মতামত ও স্বাক্ষাৎকার ধারণ করবে।
এটা একটা খসড়া আলাপ। আপনারা আরো সঠিক মতামত প্রদান করে এটাকে পূর্ণাঙ্গ করবেন। সেই আশাবাদ রইল
আবদুস ছাত্তার খান
(সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে ৩রা জুন ২০২২ তারিখে পঠিক বক্তব্য)
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি :
আহ্বায়ক : আবদুস ছাত্তার খান ( সংগঠক : গ্রাম পাঠাগার আন্দোলন)
যুগ্ম আহ্বায়ক : আলী নাঈম ( সভাপতি : শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি পাঠাগার)
সদস্য সচিব : জুলিয়াস সিজার তালুকদার ( সাবেক জিএস : সলিমুল্লাহ মুসলিম হল)
যুগ্ম সদস্য সচিব : তমাল দেবনাথ ( সভাপতি : বোসন বিজ্ঞান সংঘ)
সদস্য :
১. শামীম আকন্দ : প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটি
২. জয়তু জিকু : চলচিত্র বিষয়ক উপকমিটি
৩. সৌমিত্র চক্রবর্তী : গবেষণা বিষয়ক উপকমটি
৪. ইলিয়াস জামান : আপ্যায়ন উপকমিটি
৫ . রানু মিয়া : নিরাপত্তা উপকমিটি
৬. মঞ্চ সজ্জা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপকমিটি :
৭. কামরুজ্জামান : ঢাকা বিভাগ
৮. রাসেল আহমেদ : মংমনসিংহ বিভাগ
৯. শিপ্ত বরুয়া: চট্টগ্রাম বিভাগ
১০ , বরিশাল বিভাগ
১১. খুলনা বিভাগ
১২. পলাশ রায় : রংপুর বিভাগ
১৩. জুয়েল রানা : রাজশাহী বিভাগ
১৪. সিলেট বিভাগ
১৫. রাজেন্দ্র দেবনাথ – পাঠাগার সুহৃদ
পাঠাগার সম্মেলন ২০২২
অর্থ উপ-কমিটি
আহ্বায়ক
শাহরিয়ার ভাই
সদস্য
১. সুব্রত কুমার মুখার্জি
২. মালেক ভাই
৩. লিমন
পাঠাগার সম্মেলন ২০২২
গবেষণা উপ-কমিটি
আহ্বায়ক
সৌমিত্র চক্রবর্ত্তী
অনুষ্ঠানসূচী
বিজ্ঞ আলোচকগণের বক্তব্য
সহযোগী সংস্থা/প্রতিষ্ঠান/ব্যক্তিবর্গ
অংশগ্রহণকারীগণের প্রতিক্রিয়া
সম্মেলনস্থল